November 21, 2024

বাংলা প্রশ্নবোধক শব্দ ‘কী’ ও ‘কি’-এর বানানরীতি নিয়ে তর্ক আবার ফিরে এসেছে। একে ফিরিয়ে আনার মূলে আছেন অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান তাঁর “বাংলা বানানের যম ও নিয়ম” প্রবন্ধে (২০১৫)। তর্কটি প্রথম শুরু হয়েছিল রবীন্দ্রনাথের একটি প্রস্তাবকে কেন্দ্র করে। “প্রশ্নসূচক অব্যয় ‘কি’ এবং প্রশ্নবাচক সর্বনাম ‘কি’ উভয়ের কি এক বানান থাকা উচিত” -এ প্রশ্নে ঠাকুরের মত হল, “বানানের ভেদ থাকা আবশ্যক” (চিহ্নবিভ্রাট, ঠাকুর)। অধ্যাপক খান উদ্ধৃত মণীন্দ্রকুমার ঘোষ থেকে আমরা জানতে পারি, পুঁথি সাহিত্যে ‘কী’ এবং ‘কি’ বানান বিস্তর পাওয়া গেলেও তা অর্থ কিংবা পদ ভেদ বিবেচনায় লেখা হয়েছে বলে দাবি করা যায় না। ঠাকুরই প্রথম অর্থ বা পদ ভেদ বিবেচনায় রেখে নিয়ম প্রস্তাব করেন (খান, ২০১৫)। ঠাকুরের বিধান, “অব্যয় শব্দ ‘কি’ এবং সর্বনাম শব্দ ‘কী’ এই দুইটি শব্দের সার্থকতা সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র। তাদের ভিন্ন বানান না থাকলে অনেক স্থলেই অর্থ বুঝতে বাধা ঘটে” (বানান-বিধি ২, ঠাকুর)। তার উদাহরণ, “তুমি কি রাঁধছ?”, এবং “তুমি কী রাঁধছ?” লিখলে প্রতিবেশের সাহায্য ছাড়াই এদের স্বতন্ত্র অর্থ উদ্ধার করা যায়। এরপর থেকে ঠাকুরের নির্দেশে শুরু হল বিধিমোতাবেক ‘কি’ এবং ‘কী’ বানানের চর্চা। এই চর্চা সর্বত সফল হয়নি, তা সেই শুরু থেকেই। বিতর্কটি ফেরত আসার এও এক কারণ। তবে আরও কিছু কারণ আছে যা অধ্যাপক খান তুলে ধরেছেন। আমি তর্কটির পর্যালোচনা করার লক্ষ্যে এই রচনা হাজির করছি। সেই সঙ্গে রবীন্দ্র প্রদত্ত রীতিটির একটি সংশোধিত সংস্করণ পেশ করছি।

অধ্যাপক খান বলেন,”পরাধীন যুগের বাংলা সাহিত্যের কোথাও আপনি একটা ‘কি’ শব্দও খুঁজিয়া পাইবেন না যাহার বানান ‘কী’।” […] অর্থ প্রকাশে কোথাও তো কোন ব্যাঘাত হইয়াছে বলিয়া আমাদের মনে হয় নাই” (খান, ২০১৫)। অধ্যাপক খানের আরও একটি আপত্তির কারণ হলো, একটি শব্দের বানান একটিই হবে, বিভিন্ন পদ-এ দায়িত্ব পালন করলে তার বানান বদলে যাওয়ার রীতি বাংলায় নেই, তা সর্বনাম, অব্যয় যাহাই হোক। তাছাড়া অনুমান করি, দ্ব্যর্থক বাক্যের অর্থ উদ্ধারে প্রতিবেশের সাহায্য আমরা অহরহ নিয়ে থাকি, এখানেও নাহয় নেয়া গেল, এই মত রাখেন অধ্যাপক খান। সঙ্গে এই বিষয়টিও যোগ করা যায় যে, পদ ভেদে ‘কি’ এবং ‘কী’-এর ব্যবহার শেখা এবং নির্ভুল প্রয়োগ করাও কষ্টসাধ্য ব্যাপার, এবং কিছু পদের ক্ষেত্রে তার পরিষ্কার কোনো নির্দেশনা নেই। সেক্ষেত্রে প্রমিত বিধান হতে পারে, সকল ‘কী’-কে বাতিল করে কেবল ‘কি’ ব্যবহার করা। এটি তৎসম শব্দের যে স্মৃতি বাংলা একাডেমি বহন করতে যায়, তার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ, কেননা শব্দটির সংস্কৃতমূলের বানানও ‘কি‌’। সংস্কৃতের মূল সর্বনাম ‘কি’ থেকেই কিম্‌, কিস্‌ ইত্যাদি পদের উৎপত্তি (মনিয়ের উইলিয়ামস সংস্কৃত অভিধান দ্রষ্টব্য)।

তাছাড়া, বাংলা বানানরীতি থেকে সকল শব্দের জন্যই দীর্ঘ স্বর নির্দেশক বর্ণ ঈ, ঊ তাদের কারসহ বাদ দেয়াটা হবে বৈপ্লবিক কাজ। ঈ, ঊ তাদের কার চিহ্নেরা সংস্কৃত বানানের উত্তরাধিকার মাত্র, তারা যে স্বর নির্দেশ করত তা বাংলায় নেই। কিন্তু প্রথা ও অভ্যস্ততা একটি বিশাল ব্যাপার বানানের ক্ষেত্রে। সেই বিপ্লব ঘটালে যে আশু বিশৃঙ্খলা দেখা দিবে তা নিয়ে সবাই শঙ্কিত। একই বানানের ভিন্নার্থক শব্দের সংখ্যা বেড়ে যাবে, প্রতিবেশের প্রতি নির্ভরতা বেড়ে যাবে। নতুন রীতিতে অভ্যস্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত পাঠের গতিও কিছুটা প্রভাবিত হবে বলে অনুমান করা যায়। এসব বিবেচনায়, অদূর ভবিষ্যতে সকল দীর্ঘ স্বরবর্ণ বাতিল করার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। ফলে ফিরে আসি, আমাদের আলোচ্য প্রসঙ্গে। সকল ‘কী’ বাদ দিয়ে সেগুলিকে ‘কি’ করে দেয়া নিয়ে এমনকি সলিমুল্লাহ খানকেও দৃঢ় অবস্থানে দাঁড়াতে দেখি না। বরং দেখি, তিনি শৃঙ্খলার আনার জন্য বিকল্প পরিকল্পনা প্রস্তাব করেন। তিনি পাল্টা প্রস্তাব করেন, “বাংলা ভাষায় ‘কি’ স্থলে ‘কিই’ লিখিতে অন্যায় নাই। তাহাকে ‘কী’ করিবার বুদ্ধি সংস্কৃতের অনুচিকীর্ষা বৈ নহে। বাংলায় ‘কি’ এবং ‘ই’ পাশাপাশি বসিয়া থাকিতে সক্ষম” (খান, ২০১৫)।

অধ্যাপক খানের আপত্তিটি সঙ্গত হলেও তাঁর বিকল্প প্রস্তাবটি আমার কাছে গ্রহণযোগ্য মনে হয়নি কয়েকটি কারণে: ১) ফাঁকা একটা ‘ই’ (যা কোনো স্বরকে নির্দেশ করে না) লাগানোর যুক্তি ঠাকুরের সেই সর্বনাম/অব্যয় ব্যবধান বোঝানোর তাগিদ থেকেই আসা। এতে চেহারার পরিবর্তন হয়, কিন্তু “কোথায় ‘কি’ আর কোথায় ‘কিই’ লিখতে হবে” সেই সমস্যা দুর হয় না ২) “তুমি আমার কীইবা করতে পারবে” -এমন বাক্য বক্তার বক্তব্যের জোর যোগায় ‘ই’। তখন জোরের ই এবং ফাঁকা ই মিলে লিখতে হবে, “তুমি আমার কিইইবা করতে পারবে?”। তাতে জটিলতা বাড়ে বৈ কমে না। ৩) বাংলায় দুইটি পূর্ণ স্বর পরপর ঘটে না, আমরা যখন ‘নিই’ বলি তক্ষণ ‘ই’ স্বরটি বাদ পড়ে (সতর্ক উচ্চারণে অর্ধস্বর হয়), কিন্তু ই বর্ণটির যুক্তি তবু থাকে, সে কর্তা (আমি/আমরা)-এর নিশান হিসেবে কাজ করে। এদিকে ‘কী’-এর স্মৃতি বহন করা ছাড়া আর কোন কাজ নেই প্রস্তাবিত ‘ই’-এর। অর্থাৎ, ঈ-কারের বদলে আলগা ই বসানোয় লাভের চেয়ে জটিলতাই বাড়ে।

ঠাকুরেরও একটি বিকল্প প্রস্তাব আছে। “যদি দুই ‘কি’-এর জন্যে দুই ইকারের বরাদ্দ করতে নিতান্তই নারাজ থাক তা হলে হাইফেন ছাড়া উপায় নেই। দৃষ্টান্ত : ‘তুমি কি রাঁধ্‌ছ’ এবং ‘তুমি কি-রাঁধ্‌ছ’।” কিন্তু এতেও সমস্যা আছে। বাংলা বাক্যের শব্দক্রমে যে স্বাধীনতা আছে তাকে খর্ব করা হয়। এতদবিবেচনায় আমাদের হাতে দুইটি পথ খোলা থাকে। এক, শব্দটির সকল রূপে/পদের জন্য ‘কি’ ব্যবহার করা, দুই, কি/কী ব্যবহারের বিধিকে ব্যাখ্যা করা এবং সকল রূপের/পদের জন্য নির্দেশনা পরিষ্কারভাবে বর্ণনা করা। প্রথম পথটির দিকে আমাদের নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব বাংলা একাডেমির। আমি বরং দ্বিতীয় পথটি পরিষ্কার করার স্বার্থে রবীন্দ্র রীতিটির একটি সংশোধনী প্রস্তাব দিয়ে শেষ করছি আজকের পর্যালোচনা।

আমরা আধুনিক ভাষা বিজ্ঞানে ব্যবহৃত শব্দের একটি বর্গীকরণ ব্যবহার করতে পারি এখানে। আধুনিক রূপতত্ত্ব অনুসারে একটি ভাষার শব্দকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়: লেক্সিকাল বা শব্দকোষীয় শব্দ এবং ফাংশনাল বা ব্যাকরণিক শব্দ। শব্দকোষীয় শব্দ হলো, একটি ভাষার শব্দকোষ গঠনকারী শব্দ। এদের পরিষ্কার অর্থ আছে, সেকারণে এদের বলা হয় কন্টেন্ট ওয়ার্ড বা সার্থক শব্দ; বিভক্তিযোগে এদের শব্দরূপ পরিবর্তন করা যায়, একারণে এদের বলা হয় সবিভক্তিক শব্দ; এরা উন্মুক্ত শ্রেণীর শব্দ, কেননা এরকম শব্দ সৃজন করা যায়। সলিমুল্লাহ খান থেকে ‘সব্যয়’ কথাটা ধার নিয়ে লেক্সিকাল শব্দকে এক কথায় সব্যয় শব্দ বলতে পারি, যার মানে এই শব্দের আয় ব্যয় আছে। অন্যদিকে ফাংশনাল শব্দ বা ব্যাকরণিক শব্দের পরিষ্কার অর্থ নেই, এরা ব্যাকরণের কার্য সাধন করে মাত্র, এদের সঙ্গে বিভক্তি যোগ করা যায় না বলে এদের বলা হয় অবিভক্তিক শব্দ, এরা বদ্ধ শ্রেণীর কেননা, চাইলেই এই জাতীয় শব্দ তৈরি করা যায় না। আমরা এই ধরণের শব্দকে বলব অব্যয় শব্দ। এ বাবদে, সব্যয় শব্দ হলো শব্দকোষীয় শব্দ, যথা বিশেষ্য, বিশেষণ, ক্রিয়া, ক্রিয়াবিশেষণ, বিশেষণের বিশেষণ ইত্যাদি; আর অব্যয় শব্দ হলো ব্যাকরণিক শব্দ, যথা, নির্দেশক ‘টি’ ‘গুলি’, অনুসর্গ ‘চেয়ে’, সংযোজোক/বিয়োজক অথবা, কিন্তু ইত্যাদি। এদতবিবেচনায়, এই সিন্ধান্তে আসা যেতে পারে, আমাদের আলোচ্য শব্দটি যখন সব্যয় বা শব্দকোষীয় শব্দ হিসেবে ব্যবহৃত হবে তখন এর বানান ‘কী’ এবং যখন অব্যয় বা ব্যাকরণিক শব্দ হিসেবে ব্যবহৃত হবে তখন বানান হবে ‘কি’।

ঠাকুর নিজে ইঙ্গিত করেছেন, বিশেষণে ‘কী’ বানান হবে, তার উদাহরণে পাই, “কী তোমার ছিরি, কী-যে তোমার বুদ্ধি”, আবার বিশেষণের বিশেষণ এবং ক্রিয়ার বিশেষণতো এক প্রকার বিশেষণই, তাই তাদের বানান হবে কী, যেমন, “তোমাকে কী সুন্দর লাগছে” এবং “এখানে এলি কী করে, মানে কী ভাবে এলি?”। অন্যদিকে, সকল অব্যয় শব্দের বানান হবে ‘কি’, যেমন, তুই আসবি কি আসবি না?” এখানে ‘কি’-এর পরিষ্কার কোন অর্থ নেই, সে কেবল ব্যাকরণের প্রয়োজনে ওখানে আছে, প্রশ্নের ভাব তৈরি করছে। আবার “আসব বৈকি!” এখানেও ‘কি’-এর পরিষ্কার অর্থ নেই, এখানে তা নিশ্চয়তার ভাব তৈরি করছে। এই আর কি! আর কি- এর কি তৈরি করছে একটি উপসংহারী ভাব। কি রবীন্দ্রনাথ কি সলিমুল্লাহ খান সবাই এর মধ্যে একটা প্যাটার্ন খুঁজে পাবেন বলে আশা করি। এই বাক্যের ‘কি’ সংযোজক/বিয়োজক অব্যয়। অর্থাৎ, “সব্যয়” বা সর্বনাম, বিশেষণ, ক্রিয়াবিশেষণ ও বিশেষণের বিশেষণের জন্য বানান কী, আর অব্যয়ের জন্য ‘কি’।

লক্ষ্যনীয় যে, প্রথাগত ব্যাকরণে আমরা অব্যয়কে যেভাবে জেনে এসেছি সেই জানাতেও কিছু পরিমার্জনা এসেছে। এখানে অব্যয় নির্দিষ্ট কোনো পদ নয়, বরং বর্গ। এই বর্গে সেসব শব্দের জায়গা নেই যারা বিশেষ্য, বিশেষণ, ক্রিয়া, ক্রিয়াবিশেষণ, বিশেষণের বিশেষণ হিসবে বিবেচিত হতে পারে। আমার প্রস্তাবিত রবীন্দ্র-প্রদত্ত-রীতির সংশোধনীতে তাই, ‘কী! এতো বড় কথা?’ বাক্যে ‘কী’ মূলত সর্বনাম। এখানে ‘কী!’ মানে কী বললি তুই! ঠিক যেমন “কী সুন্দর!” কথাটিতে “কী” হলো বিশেষণ (সুন্দর)-এর বিশেষণ (মানে খুব)। আরেকটি বিষয়, সংস্কৃত কিস্‌ শব্দমূলটির অস্তিত্ব বাংলাতেও বিদ্যমান, উদাহরণ, “কিসের লাগি অতল উঠেছে জাগি” কিংবা “বৃষ্টিশেষের হাওয়া কিসের খোঁজে বইছে ধীরে ধীরে”। রবীন্দ্রনাথ এখানে হ্রস্ব ই-কার ব্যবহার করেছেন। এবং বলেছেন, “কী’ শব্দের কারণকারকের রূপ : কিসে, কিসে ক’রে, কী দিয়ে, কিসের দ্বারা। অধিকরণণেরও রূপ ‘কিসে’, যথা : এ লেখাটা কিসে আছে” (বাংলাভাষা পরিচয়, ঠাকুর)। তাঁর নিজের নিয়মের এটা বরখেলাপ। এখানে ঠাকুরের কথাতেই স্পষ্ট যে, ‘কিসে’ এবং ‘কিসের’ প্রশ্নসূচক শব্দদুটি অব্যয় শব্দ নয়, প্রথমটি সর্বনাম পদ ‘কী’ -এর সঙ্গে অধিকরণ বিভক্তি যোগে নির্মিত, দ্বিতীয়টি সম্বন্ধ বিভক্তি যোগে নির্মিত হয়েছে। এটা বিভক্তি যোগে আয়ের উদাহরণ ফলে অব্যয় হবার প্রশ্ন আসে না। সংশোধনীতে তাই প্রস্তাব থাকবে বানানদুটি হবে যথাক্রমে ‘কীসে’ এবং ‘কীসের’। ঠাকুরের তরফে নিজের রীতির আরেকটি বরখেলাপের উদাহরণ, অব্যয় পদে দীর্ঘ ঈ-কার ব্যবহার, “বিকল্প বোঝাতে ওর প্রয়োগ আছে, যেমন : কী রাম কী শ্যাম কাউকেই বাদ দেওয়া যায় না” (বাংলাভাষা পরিচয়, ঠাকুর)। এখানে বিয়োজক অব্যয় ‘কি’, সেমতে “কি রাম কি শ্যাম…” হবে।

এক কথা সত্যি যে, বানানরীতিতে এই বিশেষ বিধানটি ভাষাতত্ত্ব দ্বারা প্রণোদিত নয়, কেবল পাঠোদ্ধারের সুবিধার বিবেচনায় প্রণীত। ভাষার পদ বিভাজনের সাহায্য নিয়ে রবীন্দ্রনাথ আলোচ্য ক্ষেত্রে যে বিধান প্রস্তাব করেছেন তা কেবল “তুমি কী রাঁধছ?” এবং “তুমি কি রাঁধছ?”তে সীমাবদ্ধ। এর বাইরের কী ও কি নিয়ে তাঁর পরিষ্কার কোন বিধান নেই। কিছু জায়গায় তিনি তাঁর সর্বনাম হলে কী এবং অব্যয় হলে কি বিধানেরই বরখেলাপ করেছেন। কিন্তু তার বিধানকে যদি আরও ব্যাপক করা যায় এভাবে যে, শব্দকোষীয় বা সার্থক শব্দ হলে বানান হবে ‘কী’ এবং ব্যাকরণিক শব্দ, অর্থাৎ যার পরিষ্কার অর্থ নেই, হলে বানান হবে ‘কি’। এখানে কেবল এটুকুই যে, রবীন্দ্রনাথের পদ-ভেদে প্রদত্ত বিধানের পরিবর্তে ভাষাতত্ত্বের ‘শব্দকোষীয় এবং ব্যাকরণিক শব্দ বর্গীকরণ’ এখানে ব্যবহার করা হয়েছে বিধানটির অন্তর্বিরোধ সারিয়ে একে যথাসম্ভব সহজ ও তুলনামূলকভাবে সাধারণ করার স্বার্থে।

সংযুক্তি
সংশোধিত সংস্করণে বানানের পরামর্শ নিম্নরূপ
সব্যয় বা সার্থক শব্দ
সর্বনাম: কী, কীসে, কীসের, কী জন্য, কী ভাবে, কী দিয়ে, কী নিয়ে, কী করে, কী কারণে ইত্যাদি
বিশেষণ: কী মুখ, কী ছিরি
বিশেষণের বিশেষণ: কী সুন্দর
ক্রিয়া বিশেষণ : , কী জোরে
অব্যয় বা ব্যাকরণিক শব্দ
প্রশ্নসূচক অব্যয়: কি
বিস্ময়সূচক অব্যয়: একি/সেকি! যাবি না?
সমাপ্তিবাচক অব্যয়: যাব আরকি!
নিশ্চিতিবাচক অব্যয়: যাব বৈকি!
বিয়োজক অব্যয়: কি শ্যাম কি রাম কেউই আসবে না। তাই বলে আমরা যাব না নাকি!

Leave a Reply