This post has already been read 19 times!
১৯৮৩ সালের ছাত্র আন্দোলনের স্মৃতিবাহী ১৪-১৫ ফেব্রুয়ারির ঘটনা প্রবাহ নিয়ে গত এক দশকের মধ্যে এই বছরেই সবচেয়ে বেশি আগ্রহ লক্ষ্য করেছি। সেই আন্দোলনের সূচনা, প্রকৃতি এবং পথরেখা বিষয়ে আলোচনা একাধিক কারনে জরুরি বলে আমি মনে করি। বাংলাদেশের ইতিহাসের বিবেচনায় স্বাধীনতার পরে এটি হচ্ছে ছাত্রদের স্বাধীন আন্দোলনের দ্বিতীয় উদাহরণ। ১৯৭৩ সালে ‘ভিয়েতনাম দিবস’কে কেন্দ্র করে যে আন্দোলনের সুচনা হয়েছিলো আমি তাকে স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশের প্রথম আন্দোলন বলে মনে করি। কিন্ত এটাও উল্লেখযোগ্য যে সেটি ছাত্রদের নিজস্ব দাবি-দাওয়ার জন্যে হয়নি। সেই অর্থে বাংলাদেশের প্রথম শিক্ষা ও গণতন্ত্রের আন্দোলন হচ্ছে বিরাশি সাল থেকে সামরিক স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে গড়ে ওঠা ছাত্র আন্দোলন, যার ধারবাহিকতায় রক্তের আখরে লেখা হয় ১৯৮৩ সালে মধ্য-ফেব্রুয়ারি। আমি সেই আন্দোলনের একজন কর্মি বলে আমার এই আন্দোলনের প্রতি পক্ষপাত রয়েছে সেটি অস্বীকার করার কারণ নেই; কিন্ত গত বছরগুলোতে আমি এই আন্দোলনের বিষয়ে সকলের মনোযোগ আকর্ষনের চেষ্টা করেছি এই বিবেচনায় যে বাংলাদেশের প্রথম স্বাধীন ছাত্র আন্দোলনকে বাদ দিয়ে বাংলাদেশের ইতিহাস বোঝার চেষ্টা অসম্পূর্ণ হতে বাধ্য। তা ছাড়া ছাত্র আন্দোলনের ঐতিহ্য বুঝতে হলে, তার স্বাধীন চরিত্র বুঝতে হলে এই আন্দোলনের বিভিন্ন দিক বুঝতে হবে। বাংলাদেশের ছাত্র রাজনীতি ১৯৯০-এর পরে সামগ্রিকভাবে বদলে যাবার কারনে এখন ছাত্র রাজনীতি নিয়ে যে ধারণা তার বিপরীতে ছাত্র রাজনীতি এবং ছাত্র আন্দোলনের গৌরবজনক ঐতিহ্য তুলে ধারা উপায় হচ্ছে সেই দিনগুলোর কথা স্মরণ করা। শুধু তাই নয়, অনেকেই ছাত্র ও তরুন সমাজের ঐতিহ্য বিষয়ে অবগত না বলেই তাঁরা তরুণদের আন্দোলনের ইতিহাসের সুচনা হিসেবে সাম্প্রতিককালকে বিবেচনা করেন। বাংলাদেশের ছাত্র রাজনীতি ও ছাত্র আন্দোলনের একটা বড় দিক ছিলো বিভিন্ন সংগঠনের মধ্যে মতপার্থক্য বিষয়ে আলোচনা ও বিতর্ক; পঠন–পাঠনের আলোকে ঘটনার বিশ্লেষন ও এই বিষয়ে অন্যদের ত্রুটির দিকে তাকানো ছিলো একটি বড় কাজ। ১৯৮২-৮৩ সালে ছাত্র আন্দোলনের সময় সেই বিতর্ক বিভিন্ন প্রকাশনার মধ্য দিয়ে সাধারন ছাত্র এবং কর্মীদের কাছে তুলে ধরা হতো। সে সময় ডাকসু’র প্রকাশনা হিসেবে ছাত্রবার্তা (যার সম্পাদনা করার গৌরবে আমি অভিষিক্ত) তাতেও আন্দোলনের খবরের পাশাপাশি বিশ্লেষন প্রকাশিত হয়েছে। ১৯৮৩ সালের গ্রীষ্মকাল নাগাদ আন্দোলনে ভাটার লক্ষ্যনীয় হয়ে ওঠে। এই পটভূমিকায় সেই সময়কার প্রচলিত ধারা অনুসারে বিভিন্ন ব্যাখ্যার জবাব দেবার লক্ষ্যে ছাত্রকর্মীদের জন্যে আমি একটি প্যাম্ফলেট লিখি অক্টোবর মাসে, যার শিরোনাম ছিলো ‘ছাত্র আন্দোলনের আগামী দিন’। এ বছর অনেকেই সেই সময়কার ঘটনা প্রবাহ জনাতে, প্রবণতাগুলো বুঝতে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তাঁদের সেই আগ্রহ এবং অনুপ্রেরণার প্রেক্ষিতে আমি সেই প্যাম্ফলেটটি শেয়ার করলাম।
প্যাম্ফলেটটি পড়তে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুন —
ছাত্র আন্দোলনের আগামী দিন
This post has already been read 19 times!