বাংলাদেশের তৈরি পোশাকশিল্পে একের পর এক বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটছে। এর কোনো কোনোটিতে বিপর্যয়ের মাত্রা এতই ব্যাপক যে, তা সর্বত্র ক্ষোভ-রোষ সৃষ্টি করে_ এমনকি বাংলাদেশের পোশাক ক্রেতা দেশগুলোর ভোক্তা ও নীতিনির্ধারকদের বাংলাদেশের শ্রমনিরাপত্তা সম্পর্কে সন্দিহান করে তোলে। ১৯৯৫ সাল থেকে এ পর্যন্ত তৈরি পোশাকশিল্পে ভবন ধস ও বড় ধরনের অগি্নকাণ্ডে মৃতের সংখ্যা এক হাজার ছাড়িয়েছে। গুরুতর আহতের সংখ্যা এর কয়েক গুণ। এসব দুর্ঘটনা সম্পর্কে শিল্প মালিক, তাদের সংগঠন বিজিএমইএ-বিকেএমইএ নেতৃত্ব এবং সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গের প্রতিক্রিয়া থেকে এর গভীরতা বোঝার উপায় নেই। দুর্ঘটনায় প্রাণহানি যতই হোক না কেন, এ পর্যন্ত কোনো মালিকের শাস্তি হয়নি। তবে অন্ধ হলেই প্রলয় বন্ধ থাকে না।
২৫ এপ্রিল বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, কারখানা মালিকদের নির্মম শোষণ, সরকারের উদাসীনতা এবং নিরাপত্তার চাইতেও সস্তায় পোশাক পাওয়ার বিষয়টিকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে চলা উন্নত দেশগুলোর পোশাক ব্যবসায়ী_ সব পক্ষকেই সাভারের রানা প্লাজার বিপর্যয়ের জন্য দায়ী করতে হবে। প্রতিবেদনে একজন শ্রমিক নেতার উদৃব্দতি দেওয়া হয় এভাবে : পোশাকশিল্পের মালিকরা আইনের ঊধর্ে্ব। এ ধরনের হত্যাকাণ্ডের জন্য কাউকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে, এমন নজির নেই। এই প্রতিবেদনেই হিউম্যান রাইটস ওয়াচের দক্ষিণ এশীয় পরিচালক মিনাক্ষী গাঙ্গুলির মন্তব্য হচ্ছে :’উন্নত দেশগুলোর ক্রেতারা খুচরা বিক্রেতাদের ওপর বাংলাদেশের তৈরি পোশাক না কেনার জন্য কার্যকর চাপ সৃষ্টি করতে পারে। আমরা এমনটি দেখেছি ব্লাড ডায়মন্ডের ক্ষেত্রে। ক্রয় করা হীরার উৎস সন্দেহজনক, এটা জানার পর ভোক্তারা হীরা কেনা পরিহার করে চলতে থাকায় উৎপাদক ও রফতানিকারকরা নিজেদের বদলাতে বাধ্য হয়।’ প্রকৃতপক্ষে এটা হচ্ছে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক বর্জনের সরাসরি আহ্বান এবং তাতে সাড়া মিলতে পারে যথেষ্ট, এমন শঙ্কা আমাদের কাজের দ্বারাই সৃষ্টি করেছি। বাংলাদেশের তৈরি পোশাকশিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষ আসন্ন এ বিপদ সম্পর্কে যথেষ্ট সচেতন বলে মনে হয় না। কেউ কেউ হয়তো বিষয়টিকে আদৌ গুরুত্ব দিতেই রাজি নন।
বর্তমানে বাংলাদেশে তৈরি পোশাক কারখানা প্রায় পাঁচ হাজার। এগুলোতে কাজ করছে প্রায় ৪০ লাখ শ্রমিক, যাদের বেশিরভাগ নারী। এ খাতের রফতানি আয় এক বছরেই অন্তত দুই হাজার ৪০০ কোটি ডলার। একের পর এক দুর্ঘটনা-বিপর্যয়ে বিশ্ব বাজারে বিরূপ প্রতিক্রিয়া হয় বটে, তবে তাতেও এ খাতের বিকাশ থেমে থাকেনি। এর প্রধান কারণ অবশ্যই সস্তা ও সহজলভ্য শ্রম_ মাসে ৩৭ ডলারের সমপরিমাণ টাকা দিলেই মেলে একজন কর্মী। বড় উৎপাদক দেশগুলোর মধ্যে এত কম বেতন আর কোথাও নেই। আর এ কারণেই বাংলাদেশ ভাবছে, নিজের অবস্থান রফতানিকারকদের তালিকার শীর্ষে নিয়ে যাওয়া সম্ভব। একের পর এক দুর্ঘটনার পরও বাজার না হারানো যেমন খানিকটা বিস্ময়ের, তেমনি এটাও মনে রাখতে হবে যে, এ পর্যন্ত কোনো অপরাধের জন্যই মালিকদের কাউকে সাজা পেতে হয়নি। তারা কোনো না কোনোভাবে পার পেয়ে যায়। কেন মালিকদের জন্য এমন ছাড়? এর কারণ হচ্ছে রাজনীতি ও ব্যবসার সঙ্গে যুক্তদের আঁতাত। এমপিদের পেশাগত অবস্থানের দিকে তাকালে বিষয়টি স্পষ্ট হবে। বর্তমান সংসদের ৫২ শতাংশ সদস্য নিজেদের পরিচয়ে লিখেছেন_ ব্যবসায়ী। তাদের বাইরেও ব্যবসার সঙ্গে জড়িত কেউ কেউ রয়েছেন_ সেটা নিশ্চিত করে বলা যায়। নিজের পরিচয় লিখতে গিয়ে হয়তো অন্য কোনো পেশা লিখেছেন। ব্যবসায়ীদের মধ্যে ৩০ শতাংশ সরাসরি তৈরি পোশাকশিল্পের সঙ্গে যুক্ত। দল হিসেবেও আমরা বিষয়টি পর্যালোচনা করতে পারি। আওয়ামী লীগের রয়েছেন ২৩৫ জন এমপি। তাদের মধ্যে ১২০ জন ব্যবসায়ী। বিএনপির সদস্য মাত্র ৩০ জন। কিন্তু তাদের ১৮ জনই ব্যবসায়ী। প্রশ্ন উঠতে পারে যে, ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত রাজনীতিকরা তাদের ব্যবসার প্রসারের জন্যই রাজনীতি করছেন কি-না! ব্যবসায়ীদের তো ব্যবসা নিয়েই থাকার কথা। তারা কেন রাজনীতিতে এলেন? আর রাজনীতিতে যুক্ত থেকেই বা তাদের কী লাভ? একটু খোঁজ-খবর করলেই আমরা জানতে পারি, ব্যবসায়িক প্রয়োজনে লাইসেন্স সংগ্রহ, জমি পাওয়া, ভবন নির্মাণ, বিদ্যুৎ-পানি-গ্যাস সংযোগ এবং নিরাপত্তার আয়োজন_ প্রতিটি ক্ষেত্রেই কমবেশি আইন লঙ্ঘন করতে হয় এবং তা হয়ে থাকে অনেক ধাপে। রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকলে এ কাজ সহজ হয়ে যায়। ইনস্টিটিউট অব গ্গ্নোবাল লেবার অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের পরিচালক চার্লস কারনাঘানের এ মন্তব্য ওয়াশিংটন পোস্টে ২৫ এপ্রিল প্রকাশিত হয়েছে_ ‘বাংলাদেশের অনেক ভবনের ওপরেই আপনি আস্থা রাখতে পারবেন না। এখানকার সর্বত্র দুর্নীতি এতই ব্যাপক যে, আপনি যে কাউকে কিনে ফেলতে পারেন এবং এ জন্য কোনো শাস্তি পেতে হবে না।’ অন্য কথায় আমরা বলতে পারি, বাংলাদেশে রাজনৈতিক সংযোগ ছাড়া ব্যবসা করা কঠিন।
আরও অনেক দেশের মতো বাংলাদেশের রাজনীতির আরেকটি বাস্তবতাও আমাদের মনে রাখতে হবে। এখানে বড় রাজনৈতিক দলগুলোর তহবিলের প্রধান উৎস ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীরা যেভাবে অর্থ উপার্জন করছেন সেটা স্বচ্ছ নয়। আবার কোনো ব্যবসায়ী রাজনৈতিক দলকে কত অর্থ দিচ্ছেন এবং তার ব্যয় কীভাবে হচ্ছে সেটাও স্বচ্ছ নয়। রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনে তাদের আয়-ব্যয়ের স্বচ্ছতার প্রতিশ্রুতি দেয়। তাদের নির্বাচনী ইশতেহারেও এর উল্লেখ থাকে। আওয়ামী লীগ তাদের ইশতেহারে মন্ত্রী-এমপিদের আয়-ব্যয়ের হিসাব জনসমক্ষে প্রকাশ করার অঙ্গীকার করেছিল। কিন্তু সেটা মানা হয়নি। এ জন্য তারা যে যুক্তি দিচ্ছে, সেটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। অথচ নির্বাচন কমিশন এ জন্য ক্ষমতাসীন দলের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
আরও একটি বিষয় লক্ষ্য করা যেতে পারে। সাম্প্রতিক সময়ে সরকারের একাধিক মন্ত্রীর বক্তব্য ও কর্মকাণ্ডের সমালোচনা হচ্ছে। তাদের মধ্যে এমন ব্যক্তিও রয়েছেন, যাদের হাতে রয়েছে আমাদের অর্থনীতি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার সর্বময় ক্ষমতা। তাদের উত্থান আদৌ রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় নয়। তৃণমূল থেকেও উঠে আসেননি। তারা বহু বছর চাকরি করেছেন প্রশাসনে। বিভিন্ন দলীয় সরকার বা সামরিক শাসকদের সঙ্গে দিব্যি মানিয়ে চলেছেন। দুই বড় দলেই আমরা তাদের দেখি। তারা দল ও সরকারে গুরুত্বপূর্ণ পদ পেয়ে যান। কিন্তু যেহেতু রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সরাসরি যুক্ত থাকার অভিজ্ঞতা নেই তাই জনগণের প্রকৃত সমস্যাও উপলব্ধি করতে পারেন না। ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডের বাধা-বিপত্তি স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় কাটিয়ে ওঠার বিষয়টি নিয়েও তাদের ভাবনা নেই। বরং কীভাবে ওপরের কাউকে ম্যানেজ করে কাজ হাসিল করা যায়, সে পথ তারা সহজে বাতলে দিতে পারেন। সুদীর্ঘ কর্মজীবনে তাদের এমন অভিজ্ঞতা যথেষ্টই হয়েছে। এ পথ অনুসরণ করতে গিয়ে দেশের স্বার্থ কিংবা শ্রম অধিকার কতটা লঙ্ঘিত হচ্ছে সেটা নিয়ে তারা মাথা ঘামাতে আদৌ রাজি থাকেন না। তাদের কাছে বরং ক্ষমতায় টিকে থাকাই মুখ্য হয়ে ওঠে। ব্যবসায়ীদের বিশেষ সুবিধা দিয়ে হাতে রাখা গেলে এ কাজে সুবিধা হয়। শেয়ারবাজার, হলমার্ক ও পদ্মা সেতু কেলেঙ্কারির অভিজ্ঞতা বিবেচনায় রাখলে এ বিষয়টি স্পষ্ট হবে। এর প্রতিটি ক্ষেত্রেই আমলা থেকে রাজনীতিবিদ হয়ে ওঠা ব্যক্তিদের দায় রয়েছে বলে সাধারণ মানুষ মনে করে। তারা সরকারের জন্য ঝামেলা বাড়াচ্ছেন এবং এ থেকে সহজে নিষ্কৃতি মিলবে বলেও মনে হয় না।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, তৈরি পোশাক খাত এখন বিশ্বে দ্বিতীয় অবস্থানে এবং অচিরেই চীনের মতো অর্থনৈতিক পরাশক্তিকে হটিয়ে এক নম্বর হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি করেছে, সেই খাতের উদ্যোক্তারা ব্যবসার জন্য রাজনীতিকে আর কতদিন মেনে নেবে? অন্যকথায় আমরা বলতে পারি, তৈরি পোশাক খাতকে যদি সঠিক ধারায় ফিরিয়ে আনতে হয় তাহলে সর্বপ্রথম রাজনীতিকে ঠিক করতে হবে। দেশের সার্বিক ব্যবসা-বাণিজ্য লাভজনক করতে হলে রাজনীতিকেও সুপথে আনতে হবে। আমরা বিষয়টিকে এভাবে বলতে পারি যে, ব্যবসার জন্য রাজনীতি নয়, বরং এমন রাজনীতি করতে হবে যা দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসারের সহায়ক হয়। মাইক্রোসফট, টয়োটা, হুন্দাই প্রভৃতি কোম্পানির কথা আমরা এ প্রসঙ্গে বলতে পারি। এসব প্রতিষ্ঠানের ব্যবসা দুনিয়াজোড়া। কিন্তু স্বদেশের রাজনীতিতে যাতে ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টি না হয়, সে জন্য এর কর্ণধাররা সদাসতর্ক থাকেন। আমরা যদি বাংলাদেশের বর্তমান রাজনীতির দিকে তাকাই তাহলে কী করণীয় সেটা স্পষ্ট হয়ে যাবে। রাজনৈতিক অঙ্গনে সুবাতাস যাতে বইতে পারে সে জন্য তীব্রভাবে মেরুকরণ হয়ে পড়া অবস্থা থেকে মুক্ত হতে হবে। প্রশ্ন হতে পারে যে, মেরুকরণে ক্ষতি কী। আবার কেউ বা প্রশ্ন করবেন, ক্ষমতাসীন জোট তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা তুলে না দিলে কী ক্ষতি হতো। এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, সংবিধানের এ-সংক্রান্ত পঞ্চদশ সংশোধনী রাজনীততে বড় ধরনের মেরুকরণ সৃষ্টি করেছে। এটা এখন এমন এক পর্যায়ে পেঁৗছেছে যে, সাভারে রানা প্লাজা ধসে পড়াও ব্লেমগেমের বিষয় হয়ে পড়েছে। ক্ষমতাসীন সরকারি দলের অধীনে নির্বাচনে যেতে বিরোধী দলের আপত্তির প্রধান কারণ রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আমলাদের আঁতাত। আওয়ামী লীগ যখন বিরোধী দলে ছিল তখন তারা এটা বুঝত বলেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন চেয়েছিল। ঠিক একই কারণে এখন বিএনপির দাবি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা। আমরা ঠিক একই প্রশ্ন করতে পারি, রাজনীতির জন্য আমলা, নাকি আমলাদের জন্য রাজনীতি। আমলারা নির্বাচনে বড় দায়িত্ব পালন করে থাকেন। তারা রিটার্নিং অফিসার হন। নির্বাচন কমিশনে ডেপুটেশনের দায়িত্ব পালন করেন। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী থাকে তাদের নিয়ন্ত্রণে। তাদের পদোন্নতি ও পোস্টিংয়ের প্রধান মানদণ্ড যতটা দলীয় রাজনীতির প্রতি আনুগত্য_ দক্ষতা ততটা নয়। এ ক্ষেত্রে পেশাদারিত্বের দারুণ অভাব। এ জন্য প্রধান দুটি দলই দায়ী।
এখন সার্বিক পরিস্থিতিই আমাদের ভাবিয়ে তুলছে। বর্তমান বিশ্বায়নের যুগে এখানে কী ঘটছে, সেটা দূরদেশের সাধারণ মানুষও সহজে দ্রুত জেনে যায়। ব্যবসায়ীদের এটা ভাবলে চলবে না যে, সরকারের সঙ্গে থাকলেই পার পাওয়া যাবে। আপনার পণ্যের দূরদেশের ক্রেতারা আধুনিক প্রযুক্তি ও যোগাযোগ ব্যবস্থার কল্যাণে তাৎক্ষণিক জেনে যায় কারখানার কাজের মানসম্মত পরিবেশ বজায় রাখায় মালিকদের উৎসাহ-আগ্রহের অভাব এবং সরকারও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় না। একটি শীত বা গ্রীষ্মের মৌসুমে বিদেশি ক্রেতারা যদি বাংলাদেশ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়, তাহলে কী বিপর্যয় নেমে আসবে সেটা ভাবতে গেলেও শিউরে উঠতে হয়। বিজিএমইএ-বিকেএমইএ-এফবিসিসিআইয়ের মতো ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতাদের এটা বুঝতে হবে যে, বিশ্বব্যাপী প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে তাদের অবশ্যই দেশে স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক রাজনীতির পেছনে বিনিয়োগ করতে হবে। এর অর্থ রাজনৈতিক দলকে চাঁদা দেওয়া নয়, বরং রাজনীতিকে কলুষমুক্ত রাখতে সহায়তা দান। বাংলাদেশে যাতে রাজনৈতিক সমঝোতা প্রতিষ্ঠিত হতে পারে সেজন্যও তাদের উদ্যোগী ভূমিকা থাকা দরকার। সব দলের অংশগ্রহণে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানে সহায়ক ভূমিকা রাখার মধ্যে তাদেরও স্বার্থ রয়েছে।
শুরু করেছিলাম একটি অশুভ সংকেত দিয়ে। শেষ করব আরেক ধরনের অশুভ সংকেত দিয়ে। রানা প্লাজায় ধসের পর শ্রমিকরা দলে দলে রাস্তায় নেমে এসেছে এবং ভাংচুর করেছে। হারুকি মোরাকামির লিটল ম্যান বা নগণ্য মানুষের কথা এখানে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই। বাংলাদেশের তৈরি পোশাকশিল্পের লিটল ম্যানরা কিন্তু মোটেই নগণ্য বা ক্ষুদ্র নয়, বরং তাদের হাতে রয়েছে অশেষ ক্ষমতা। তারা সংখ্যায় অনেক। রানা প্লাজায় বিপর্যয়ের পরও যদি দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হয় এবং সবকিছু ঠিক পথে আনার জন্য যদি রাজনীতিক ও ব্যবসায়ী সমাজের কর্ণধাররা উদ্যোগী না হন তাহলে ভবিষ্যৎ আরও বিপর্যয়কর হতে পারে।
প্রথম প্রকাশঃ দৈনিক সমকাল, এপ্রিল ২৮, ২০১৩