December 26, 2024

সূত্রঃ http://www.hrw.org/news/2012/08/28/bangladesh-vendetta-against-child-shot-troops

বাংলাদেশে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি যে সহিংসতার সূচনা হয়েছে তা যে অভূতপূর্ব সে কথা বলার অপেক্ষা রাখেনা। বাংলাদেশে রাজনৈতিক সহিংসতা কোনো বিরল বিষয় নয়। স্বাধীনতা পরবর্তী ৪২ বছরের প্রায় পুরোটা জুড়ে আমরা কোনো না কোনো ধরণের রাজনৈতিক সহিংসতা প্রত্যক্ষ করেছি। এই সময়ে রাজনৈতিক সহিংসতার চরিত্র ও প্রকৃতি দু-ই বদলেছে। একথা নিঃসন্দেহে বলা যায় যে তার প্রসারও ঘটেছে। কিন্ত এসব ইতিহাসকে ম্লান করে দিয়েছে গত কয়েক দিনের ঘটনা প্রবাহ, বিশেষ করে ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ৪ মার্চ পর্যন্ত সারা দেশ জুড়ে আমরা যে ঘটনাবলি প্রত্যক্ষ করেছি। এইসব সহিংস ও নাশকতামূলক ঘটনায় প্রকৃতপক্ষে কত জনের প্রাণহানি ঘটেছে আমরা তার কোনো সঠিক হিসাবও জানিনা। রাষ্ট্রীয় ও ব্যক্তিগত সম্পদের ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে কোনো ধারণা পাওয়া যায় নি। শুধু তাই নয় ৪ মার্চের পরও সহিংসতা অব্যাহত রয়েছে এবং আগামী দিনগুলোতে তার যে পুনরাবৃত্তি ঘটবেনা তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতিতে এমন অনুমান করা ভুল হবেনা যে ধরণের ঘটনা এই সহিংসতার সূচনা করেছিল তা আবারও দেশের জন্যে অপেক্ষা করছে। এই সহিংসতায় জামায়াতে ইসলামীর নেতা ও কর্মীদের অংশগ্রহণ বিষয়ে গনমাধ্যমে বিস্তারিত প্রকাশিত হয়েছে, পুলিশ ও আইন প্রয়োগকারী বাহিনীর গুলিতে নিহত হয়েছেন অনেকে, পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে এবং এই বাহিনীর বেশ কয়েক জন সদস্য নিহত হয়েছেন। পাশাপাশি এটাও আমরা জানি যে দেশের বিভিন্ন এলাকায় সংখ্যালঘুদের ওপরে হামলা হয়েছে।

বাংলাদেশের গণমাধ্যমে অধিকাংশ সহিংস ঘটনার, দেশ জুড়ে চলা তান্ডবের বর্ণনা প্রকাশিত হচ্ছিলো তখনও সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো সরকারি ভাষ্য প্রকাশ করা হয়নি । ৬ মার্চ সংসদে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী যে বিবৃতি দিয়েছেন তাতে বলা হয়েছে ৪ মার্চ পর্যন্ত মোট ৬৭ ব্যক্তি মারা গেছেন। একই সময়ে আমরা সংবাদপত্রে প্রকাশিত হিসেবে ৭৪ জনের মৃত্যুর কথা জানতে পেরেছি। প্রথম আলো’তে প্রকাশিত হিসাব অনুযায়ী নিহত ৭৪ জনের ৩৮ জন জামায়াত-শিবিরের কর্মী, ৩০ জন সাধারন মানুষ ও অন্য রাজনৈতিক দলের সদস্য এবং ৬ জন পুলিশ।  এরপরেও পুলিশের একজন সদস্য এবং বেশ কয়েক জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। সংসদে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর দেয়া বক্তব্যকে দায়সারা সরকারী বিবৃতির অতিরিক্ত কিছু মনে হয়নি। এটা দুঃখজনক, কেননা আমাদের চেয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বেশি বোঝার কথা যে এই সব ঘটনা আর দশটা ঘটনার মতো নয়। তিনি নিশ্চয় এটাও জানেন যে, রাজনৈতিক ভিন্ন মতাবলম্বী এমনকি অপরাধীদেরও জীবনের দায়িত্বও সরকারের।

কি পরিস্থিতিতে এত মানুষের মৃত্যর ঘটনা ঘটলো সেটা বিস্তারিতভাবে তদন্তের কোনো উদযোগ সরকারের পক্ষ থেকে যেমন লক্ষ করা যাচ্ছে না তেমনি বাংলাদেশের মানবাধিকার সংঠনগুলোর পক্ষ থেকেও এ নিয়ে বিবৃতির অতিরিক্ত কোনো পদক্ষেপ চোখে পড়েনি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন যে ধংসাত্মক ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার জন্য ২৩৫টি মামলা হয়েছে এবং ১ হাজার ৫৭২ জনকে আটক করা হয়েছে। এ সব ব্যক্তিকে বিচারের মুখোমুখি করা হবে এবং তাঁদের সংশ্লিষ্টতা প্রমাণ হলে তাঁরা সাজা ভোগ করবে। দোষী ব্যক্তিদের সাজা পাওয়ার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে কারো মনেই সংশয় ত্নেই। কিন্ত তাতে করে আমরা আসন্ন পরিস্থিতির কিছু কি জানতে পারবো? তাতে করে কি কোন পরিস্থিতিতে আইনে শৃঙ্খলা পরিস্থিতির এত দ্রুত অবনতি সম্ভব হল তা আবিশার করা যাবে। তা ছাড়া বিচার প্রক্রিয়া তো কালই শেষ হবেনা।

আমরা জানি যে, পাঁচদিন ধরে কমপক্ষে ১৮টি জেলায় এই তান্ডব চলেছে । কতগুলো ঘটনায় পুলিশকে গুলি করতে হয়েছে, কি পরিস্থিতিতে এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে তার একটা হিসাব সকলের সামনে হাজির করা সরকারের দায়িত্ব বলেই বিবেচনা করতে হবে। সে ক্ষেত্রে কেবল সংসদীয় বিবৃতি যথেষ্ট নয়। কথাটা এ কারনে আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছে যে দেশের নাগরিকদের নিরাপত্তার দায়িত্ব সরকারের এবং নাগরিকদের জানা দরকার যে তাদের নিরাপত্তার জন্য সরকার কি ব্যবস্থা নিচ্ছেন। সরকারের কাজে ব্যত্যয় ঘটলে, দায়িত্ব পালনকালে ত্রুটি হয়ে থাকলে তা জানানোর দায়িত্ব সরকারের এবং জানার অধিকার নাগরিকদের আছে। এসব ঘটনায় শিশু এবং নারীরা নিহত হয়েছেন বলে আমরা জেনেছি। রাজশাহীর ৩ মার্চে গোদাগারীর ঘটনায় একজন শিশু নিহত হবার খবরটি  নিশ্চয় অনেকেরই চোখে পড়েছে। এ ধরণের ঘটনা একাধিক যেখানে মিছিলকারী কিংবা হামলাকারীদের মোকাবেলা করার সময় পুলিশ বা বিজিবি’র গুলিতে নিহত হয়েছেন পথচারী, আবার জামায়াতের কর্মীদের সহিংসতায়ও পথচারীর প্রাণনাশ হয়েছে ।

জামাতের কর্মীরা একাধিক জায়গায় কেবল যে পুলিস ও বিজিবি’র ওপরে চড়াও হয়েছে তাই নয় বেসামরিক সরকারি কর্মচারীদের ওপরে হামলা চালিয়েছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জের পল্লী বিদ্যুত উপকেন্দ্রের কর্মচারিদের সরকারি আবাসে আগুন লাগিয়ে ৪৮ পরিবারকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা তার সবচেয়ে বড় প্রমাণ। একজন প্রকৌশলীকে বাড়ির ছাদ থেকে ফেলে দেয়ার ঘটনাও ঘটেছে। কিন্ত এ সব পরিস্থিতিতে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ  যথেষ্ট ছিল কিনা সেটা জানা প্রয়োজন। পাশাপাশি এটাও নিশ্চিত করা দরকার যে সরকারের পক্ষ থেকে, আইন প্রয়োগকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে এমন কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয় নি যা নাগরিকদের জান-মাল-অধিকারের জন্যে হুমকি ছিলো। সেটা বুঝতে হলে এ বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে, মানবাধিকার সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে, এমনকি প্রয়োজন হলে বিচার বিভাগের পক্ষ থেকে তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। দেশের জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে এখনও যে কিছুই করা হচ্ছে না সেটা সত্যি বিস্ময়কর। মনে রাখা দরকার কোনো তদন্ত মানেই কারো দোষ খুঁজতে যাওয়া নয়। তদন্ত হওয়ার মানে হচ্ছে জবাবদিহি নিশ্চিত করা এবং ভবিষ্যতে এ ধরণের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করা। এতে করে আমরা সম্ভবত এও জানতে পারবো যে এই ধরণের সহিংসতার প্রস্ততি যারা নিয়েছে তাঁদের শিকড় কতটুকু গভীরে, কি ধরণের প্রস্ততি তাঁদের ছিলো।

সরকারের পক্ষ থেকে এটা বলা সম্ভব যে এ ধরণের সহিংসতার জন্যে তাঁরা প্রস্তত ছিলেন না। সেটা ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকেই সরকারের আচরণে স্পষ্ট। কিন্ত জামায়াতের কর্মী-সমর্থকরা যে এ বিষয়ে অনেক দিন ধরেই প্রস্ততি নিচ্ছিলো সেটা তাঁদের চালানো তান্ডবের ধরণ থেকেই বোঝা যায়। কিন্ত এর সামান্যও সরকারের জানা ছিলনা দেখে আমরা কেবল বিস্মিত হতে পারি। এই পরিস্থিতি দেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর দুর্বলতা প্রকাশ করে বললে সামান্য-ই বলা হবে, কার্যত গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এই নিয়ে এই সরকারের আমলেই বড় দুটো সময়ে তাঁদের দক্ষতা ও যোগ্যতা প্রমাণে ব্যর্থ হল। ২০০৯ সালে বিডিআর বিদ্রোহের সময় যেমন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো থেকেছে অন্ধকারে, ঠিক এই ক্ষেত্রেও তাঁদের ভূমিকা হয়েছে সাধারন নাগরিকদের মতো। তাঁরা যে এই রকম পরিস্থিতি আঁচ করতে পারলো না সেটা কি কাঠামোগত দুর্বলতার কারনে নাকি অন্য কোনো কারনে সেটা খুঁজে দেখা সরকারের জন্যে খুবই জরুরি। কেননা তাঁদের এই দুর্বলতা বা ব্যর্থতা না থাকলে সম্ভবত অনেক প্রাণহানি ঠেকানো যেতো।

প্রাসঙ্গিকভাবে বিভিন্ন পুলিশ স্টেশনে হামলার বিষয়টি সকলের বিবেচনা দাবি করে। গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বামনডাঙ্গা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে ১ মার্চ সংঘটিত হত্যাকান্ডের যে বর্ননা পাওয়া যাচ্ছে তা কেবল বেদনাদায়ক-ই নয় উদ্বেগজনকও। বামনডাঙ্গা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ উপপরিদর্শক আবু হানিফ সাংবাদিকদের বলেছেন যে, ‘রেলস্টেশনে হামলার পর তিন-চার হাজার লোক তদন্ত কেন্দ্রে হামলা শুরু করলে আমরা তাদের থামতে বলি। তারা পাথর ছুড়ে মারতে থাকে। আমরা বলি, সামনে এগুলো আমরা গুলি করব। এ সময় তারা উল্টো গুলি ছোড়ে। পরিস্থিতি দেখে আমরা শটগান ও রিভলবারের ৩২টি ফাঁকা গুলি ছুড়তে ছুড়তে নিরাপদে সরে যাই। তখন তারা নিরস্ত্র পুলিশ সদস্যদের পেটাতে শুরু করে। যে চারজন পুলিশ মারা গেছেন, তাঁরা সবাই নিরস্ত্র ছিলেন।’ ঝিনাইদহ জেলার হরিণাকুণ্ডু থানার ঘটনা ঘটে ৩ মার্চ। ওসি রেজাউল ইসলাম রেজা’র বক্তব্য অনুযায়ী  উপজেলা পরিষদে ১৫ জন পুলিশ ডিউটিরত ছিলেন। দুপুর ১২টার দিকে জামায়াত শিবিরের কর্মীরা মিছিল নিয়ে এসে হরিনাকুন্ডু উপজেলা পরিষদ ভবন ঘেরাও করে। তাঁরা তাঁরা অগ্নিসংযোগ ও ভাংচুর করতে থাকে। তাঁদের বাঁধা দিতে গেলে তাঁরা পুলিশকে লক্ষ করে বৃষ্টির মতো ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। এক পর্যায়ে হামলাকারীরা উপজেলা পরিষদ বাউন্ডারির ভিতরেই নির্বাহী অফিসারের অফিসের পেছনে কনস্টেবল ওমর ফারুককে কুপিয়ে কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে। হত্যার পর কনস্টেবলের শটগানটি তারা ছিনতাই করে নিয়ে যায়।

প্রাপ্ত ভাষ্য অনুযায়ী দেখা যায় দুটি ক্ষেত্রেই পুলিশ যথেষ্ট পরিমানে সংযত আচরণ করেছে, কিন্ত এই পরিস্থিতি কি অন্য কোনভাবে মোকাবেলা করে পাঁচটি প্রাণ রক্ষা করা যেত? এই পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে অন্যদের যোগাযোগের ব্যবস্থা কি ছিলো, কেন তাঁদেরকে এ ধরণের পরিস্থিতিতে পড়তে হল সেটা পুলিশের কর্মকর্তারা নিশ্চয় বিভাগীয়ভাবে তদন্ত করবেন, কিন্ত যাদের কাছে নিরাপত্তার দায়িত্ব তাঁদের নিরাপত্তাহীনতা নাগরিকদের জন্য স্বস্তির বিষয় নয়।

পরিস্থিতি যে মাঠ-পর্যায়ের প্রশাসনের জন্য যথেষ্ট পরিমানে উদ্বেগের কারণ হয়েছে সেটা সম্প্রতি সংবাদপত্রের খবরে প্রকাশিত হয়েছে। ৪০টি জেলা থেকে জেলা প্রশাসকরা এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাহায্য চেয়ে চিঠি দিয়েছেন। কিন্ত এর জবাবে সরকারের চিন্তা ভাবনা কেবলই প্রশাসনিক বলেই প্রতীয়মান হয়। সরকার একটি বিশেষায়িত বাহিনী তৈরির কথা ভাবছেন বলে খবর বেড়িয়েছে। বিরাজমান সমস্যাগুলো চিহ্নিত না করে, তার সমাধান না করে কেবল তাড়াহুড়া করে আরেকটা বাহিনী তৈরি করলেই সমস্যার সমাধান হবে মনে করার পেছনে আমি কোনো যুক্তি খুঁজে পাইনা। কেন এত দ্রুত সহিংসতা ছড়িয়েছে; কারা এবং কিভাবে এই সব কার্যক্রম সংগঠিত করেছে সে গুলো বোঝা খুবই জরুরি। তার জন্য দরকার যেসব এলাকায় সহিংসতার মাত্রা বেশি ছিল সে গুলোতে অত্যন্ত দ্রুত মাঠপর্যায়ে অনুসন্ধান চালানো এবং দেখা যে কেবল দলীয় সাংগঠনিক শক্ত জোরেই জামায়াতের পক্ষে এই ধরণের সহিংসতা চালানো সম্ভব হয়েছে নাকি এর পেছনে আরো কোনো ধরণের কারণ কাজ করেছে। বগুড়ায় হামলাকারীরা স্থানীয় নয় বলে যে খবর পাওয়া যাচ্ছে সেটা কি ভবিষ্যতের জন্য কোনো ইঙ্গিত?

এই মুহুর্তে এ সব প্রশ্ন তোলার কারণ একাধিক। প্রথমত যুদ্ধাপরাধ বিষয়ক ট্রাইব্যুনালের দেয়া তৃতীয় রায়ের পর আমরা এই পরিস্থিতি দেখতে পারলাম। এখনও আদালতের  সামনে অনেকগুলো মামলা রয়েছে। সেগুলোর মধ্যে দেলোয়ার হোসেন সাঈদির চেয়েও দলীয়ভাবে গুরুত্বপূর্ন পদে আসীন জামায়াত নেতাদের মামলা রয়েছে। তাঁদের মামলার রায়ের পর পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকারের প্রস্ততি কতটুকু সেটা খুব স্পষ্ট নয়। দ্বিতীয়ত জামায়াতের পক্ষ থেকে সহিংসতা অব্যাহত রাখার চেষ্টা থাকাই স্বাভাবিক। কিন্ত তাকে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিকভাবে মোকাবেলার বদলে, আগের থেকেই সাধারন মানুষকে নিরাপত্তার বিষয়ে অভিহিত ও প্রস্তত করার বদলে, সহিংসতা প্রতিবিধানের চেষ্টা কারা বদলে কেবল পুলিশি ব্যবস্থা দিয়ে মোকাবেলা করলে তাতে সাধারন মানুষের চেয়ে জামায়াত-ই বেশি লাভবান হবে বলে আশংকা করা যায়।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি যে পর্যায়ে এসে পৌচেছে তাতে আগামী দিনগুলো নিয়ে সবারই আশংকা ও উদ্বেগ আছে। সেটা কেবল বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বাংলাদেশের মানুষের বা প্রবাসী বাংলাদেশীদেরই নয়; আন্তর্জাতিক সমাজেরও। সে অবস্থায় সরকারের জন্য একটা বড় চ্যালেঞ্জ হল আন্তর্জাতিক জনমত যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের পক্ষে রাখা। সরকারের গত চার বছরের রেকর্ড মোটেই ভালো নয়, আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে তো রেকর্ড মোটেই ভালো নয়। নির্বাচনের বছরে যে কোনো দেশে যে কোনো সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ সন্দেহের চোখে দেখা হয়ে থাকে। ফলে সরকার যদি তার নিজস্ব বা দলীয় লাভের বিবেচনা প্রসূত কোনো সিদ্ধান্ত নেয় এবং তার সঙ্গে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবণতি ঘটে তাতে করে কেবল সরকার বা ক্ষমতাসীন দল নয় যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এবং সারা দেশই মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্থ হবে।

ইলিনয়, ৭ মার্চ ২০১৩

প্রথম প্রকাশঃ www.bdnews24.com , মতামত-বিশ্লেষণ ২০১৩/৩/১০

http://bangla.bdnews24.com/opinion_bn/article600328.bdnews

Leave a Reply